‘বইতে পারলে হুইতেও পারমু’

‘লঞ্চে তো ফাঁক নাই। জাগা রাখছি। আয় তাড়াতাড়ি। আরে ব্যাডা বইতে পারলে হুইতেও পারমু, চিন্তা হরিস না’- কথাগুলো মোবাইলে অপর প্রান্তে থাকা একজনকে বলছিলেন পটুয়াখালীগামী সুন্দরবন-৮ লঞ্চে থাকা এক যুবক।
পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কথাগুলো শুনে জানতে চাইলাম কোথায় যাবেন? বললেন- বগা যামু। কিন্তু লোক একজন আয় নাই এহনো।’

গত কয়েকদিন ধরে মানুষ গ্রামে ছুটলেও বৃহস্পতিবার প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বেশিরভাগ রাজধানী ছাড়ছেন। আর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সাধারণত লঞ্চযোগে বাড়ি যায়। এ কারণে অন্যান্য সময়ের থেকে সদরঘাটে আজ মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আর লঞ্চে ভিড়ের কথা মাথায় রেখে পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, হুলারহাট, বরিশালের যাত্রীরা আগেভাগেই সদরঘাট অভিমুখে রওনা হন। যে কারণে দুপুরের দিকে চাপটা একটু বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

লঞ্চের কেবিন অনেক আগে বুকিং হয়ে গেছে এসব লঞ্চের। কিন্তু ভিড়ের কারণে ডেকে জায়গা পাওয়াও মুশকিল হয়ে পড়েছে যাত্রীদের কাছে। তবে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করার জন্য এমন কষ্ট করে বাড়ি যেতেও আপত্তি নেই কারো।
লঞ্চে ঘুরে দেখা গেছে, ডেক, কেবিনের সামনের জায়গা সব জায়গায় যাত্রীদের দখলে। যে যার মতো করে জায়গা নিয়ে বসে আছেন।

এদিকে পটুয়াখালীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন-৮ লঞ্চ, প্রিন্স অফ আওলাদ, প্রিন্স অফ রাসেল-২ বিকাল ৫টায় ছাড়ার কথা থাকলেও যাত্রীর চাপের কারণে বেলা সাড়ে তিনটার দিকেই সদরঘাট ছেড়েছে। নৌপুলিশ, বিআইডব্লিউটিসির লোকজনকে সদরঘাটে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি না হয় সে জন্য তৎপর দেখা গেছে।

সাধারণ পুলিশেকেও তৎপর দেখা গেছে রাস্তায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা না হয় সেজন্য।

এদিকে অন্যান্য বছরের মতো যানজট বেলা ৩টা পর্যন্ত ছিল না। এছাড়া সদরঘাটের দিকে আসতে রাস্তার ফুটপাতে কোনো দোকান বসতে না দেয়ায় মানুষ নির্বিঘ্নে পায়ে হেঁটে ঘাটে আসতে পারছেন।